প্রতিনিধি ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৪:০০:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের উজ্জ্বল বোলিং সত্ত্বেও ডেভন কনওয়ে ও অভিষিক্ত মিচেল হেয়ের অর্ধশতকে ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচে দারুণভাবে এগিয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রানের লিড নেওয়ার পর দিনের শেষ সেশনে কিউই পেসারদের ধারালো আঘাতে দ্বিতীয় ইনিংসে দুই উইকেট হারিয়ে এখনো ৪১ রানে পিছিয়ে ক্যারিবীয়রা।

উইন্ডিজ বোলাররা দারুণ সব স্পেল উপহার দিয়ে কিউইদের চাপে রাখলেও বেশ কয়েকজন ব্যাটারও ঢিলেঢালা শটে নিজেরাই আউট হয়েছেন। তবু সুযোগ পেয়ে কনওয়ে ও হয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
কনওয়ের ৬০ রানের ইনিংস-যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাঁর প্রথম এবং ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটি-এক প্রান্ত ধরে রাখে। অন্যদিকে, অভিষেক ম্যাচে মাঠে নামা হয় নম্বর ছয় থেকে খেলেন আগ্রাসী ৬১ রানের ইনিংস। তাদের ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ড ২৭৮/৯ স্কোরে ইনিংস ঘোষণা করে; ইনজুরির কারণে ব্যাটিংয়ে নামেননি ব্লেয়ার টিকনার।
তাজা বলে কেমার রোচ, জেডেন সিলস, ওজে শিল্ডস এবং অ্যান্ডারসন ফিলিপ ধারাবাহিকভাবে ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেন। বল দুই দিকেই সুইং করছিল, মাঝে মাঝে পিচ থেকেও বাড়তি মুভমেন্ট পাচ্ছিল। তবে আলগা বলগুলো কনওয়ে দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে আটটি চারে ইনিংসটিকে এগিয়ে নেন।
নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে দাঁড়িয়ে কনওয়ে দেখেন-টম ল্যাথাম (১১) রোচের দারুণ ইনসুইংয়ে বোল্ড হন; কিছুক্ষণ পর উইলিয়ামসন (৩৭) ফিলিপের বলে বোল্ড। লাঞ্চের পর ক্রাইস্টচার্চে ১৭৬ রানের ইনিংস খেলা রাচিন রবীন্দ্রও রোচের বলে ওয়াইড ডেলিভারিতে ছটফট করে আউট হন। এরপর কনওয়ে নিজেও জাস্টিন গ্রিভসের বাজে ডেলিভারিতে লেগ সাইডে ক্যাচ দেন-তেভিন ইমলাকের দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচে। এ পর্যায়ে ১১৭/৪-এ কিউই শিবিরে খানিকটা দোলাচল দেখা দেয়।
এরপর পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ সামলায় ড্যারিল মিচেল (২৫) ও হয়। মিচেল ছিলেন ধীরস্থির, আর হয় খেলেছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ছাপ রেখে-অফ সাইডে কাট, আর শর্ট বলে আত্মবিশ্বাসী পুল শট। দুজনেই শেষ পর্যন্ত লেগ সাইডে ‘স্ট্র্যাঙ্গেল’ হয়ে ধরা পড়েন; হয় শিল্ডসের ছোট বলে পুল করতে গিয়ে রোচের হাতে ক্যাচ দেন গভীর স্কোয়ার লেগে। ২১৩/৬ এ নামার পর গ্লেন ফিলিপস (১৮) এবং টেলএন্ডাররা লিড বাড়াতে সাহায্য করেন।
ফিলিপসকে উইন্ডিজ পেসাররা লাগাতার শর্ট বলে চাপে রাখছিলেন-কখনো বডি-ব্লো, কখনো টপ-এজ। শেষমেশ স্পিনে পরিবর্তন আনেন অধিনায়ক রোস্টন চেজ। মাত্র চার বলেই ফিলিপসের লফটেড শটে ভুল করিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ তুলিয়ে নেন।
পরে জ্যাক ফোল্কস ৪৩ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন, অনেক রানই আসে এজ হয়ে গলি অঞ্চলে। জেকব ডাফি আগুয়ান হয়ে লং-অফ ও লং-অন দিয়ে বাউন্ডারি নেন। আর নাম্বার ১০ মাইকেল রে টেস্ট অভিষেকে বিরল কীর্তি গড়েন-ওভারথ্রো হয়ে আসে পাঁচ রান। শেষ পর্যন্ত রে ১৩ রানে আউট হন, সিলস তুলে নেন ইনিংসের প্রথম উইকেট।
যদিও নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং কিছুটা দোদুল্যমান ছিল, দিনের শেষ ভাগে তাদের পেসাররা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনেন। সপ্তম ওভারে জন ক্যাম্পবেল রে–এর ইনসুইংয়ে বোল্ড। পরের ওভারে নাইটওয়াচম্যান ফিলিপ প্রথমে রিভিউতে টিকে গেলেও দ্বিতীয়বার এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন। ব্র্যান্ডন কিং (১৫*) ও কাভেম হজ (৩*) আর কোনো বিপদ হতে দেননি, তবে শুক্রবারের খেলা শুরুর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখনো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০৫ ও ৩২/২ (কিং ১৫*, রে ১-৪, ডাফি ১-৮)
নিউজিল্যান্ড ২৭৮/৯ ডিক্লেয়ার (হয় ৬১, কনওয়ে ৬০, ফিলিপ ৩-৭০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ পিছিয়ে আছে ৪১ রানে।











